সরকারি হিসাবেই গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫০ হাজার, আহত লক্ষাধিক

গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, ৫০ হাজার নিহতের সংখ্যা শুধুমাত্র সরকারি হিসাব। বহু মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, যাদের তালিকাভুক্ত করা যায়নি।

ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় গাজার মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসাবেই ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে ধ্বংসস্তূপে মরদেহের সংখ্যা হিসাবে নিলে তা বেশ আগেই ৬১ হাজার ছাড়িয়েছে বলে তথ্য গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। খবর আল জাজিরা।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে কারণ রোববার রাতে খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের সার্জারি ভবনে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আগুন ধরে যায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত এক বিবৃতিতে হামলার কথা স্বীকার করে জানায়, তারা হাসপাতালে হামাসের একজন ‘গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে’ লক্ষ্যবস্তু করেছিল।

এর আগে, রোববার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিস ও রাফায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র।

ইসরায়েল জানুয়ারি মাসে হামাসের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনীর গাজা থেকে পুরোপুরি সরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তারা তা করেনি।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতদের তালিকায় এখনো ১১ হাজার নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের মৃত বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। গত জুলাইয়ে ‘দ্য ল্যানসেট’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, কেবল হামাস সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করার দাবি ইসরায়েল বারবার জানিয়ে আসলেও মৃতের সংখ্যা একেবারেই ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ওমর রহমান বলেন, গত ১৭ মাসে ইসরায়েল এমন অনেক দাবি করেছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। বরং প্রমাণ বলছে, বেসামরিক নাগরিক ও অবকাঠামোকে ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যার ফলে শিশুমৃত্যুর হার ভয়াবহভাবে বেড়েছে।

গাজা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, ৫০ হাজার নিহতের সংখ্যা শুধুমাত্র সরকারি হিসাব। বহু মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, যাদের তালিকাভুক্ত করা যায়নি। এদের মধ্যে ১৭ হাজার শিশু। গাজার একটি গোটা প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে।বণিক বার্তা ডেস্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *