লৌহজংয়ে ইউপি সদস্যের খালের মাটি চুরি, কৃষকের ধাওয়াতে পালালো শ্রমিক 

তুষার আহাম্মেদ –  প্রসাশনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ঘাসভোগ গ্রামে সরকারী খালে ড্রেজার বসিয়ে রাতের আধাঁর মাটি চুরি করছে ইউপি সদস্য সহ কতিপয় ব্যাক্তি। শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে স্হানীয় কৃষকরা এ অবৈধ মাটি কাটতে প্রতিরোধ করতে গেলে ইউপি সদস্য শেখ বুলবুল আহমেদ গংদের ড্রেজার শ্রমিকরা পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে সরকারী খালে ড্রেজার বসিয়ে মাটি লুটপাট করছে উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য সেখ বুলবুল আহমেদ, সোরহান ও স্বপন নামের ব্যাক্তি। এতে খালের পাশের কৃষকের জমি ভেঙ্গে খালে বিলিন হচ্ছে। অসহায় কৃষক বারবার প্রতিবাদ জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা। পরে তারা আদালত হতে নিষেধাজ্ঞা আনলেও তাও কর্নপাত করছেনা প্রভাবশালীরা। পরে লৌহজং উপজেলা প্রসাশন মাটি কাটতে নিষেধ করায় এখন তারা সরকারী খাল হতে রাতের আধাঁরে মাটি চুরি করছে।
স্থাণীয়ভাবে জানাগেছে, বুলবুল, সোরান ও স্বপন নামের ব্যাক্তি সারা বছরই খালের মাটি চুরি সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। তারা মোকাজ্জল নামে স্থাণীয় এক ব্যাক্তির কাছ হতে মাটি কিনে ড্রেজার দিয়ে নিচ্ছে বলে দাবী করছে। তবে মোকাজ্জল জানিয়েছে সে তাদের কাছে কোন মাটি বিক্রি করেনি। স্থাণীয় একটি স্কুল ও গলিয়া খোলা ভরাব  নাম করে মাটি কাটলেও এরা বিভিন্ন স্থানে মাটি বিক্রি করছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, ডহুরী-তালতলা খালের সাথে সংযুক্ত হওয়া ঘাসভোগ এলাকার খালটিতে সংযোগস্থলের পাশে মিনি ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটছে তারা। যে স্থানে মাটি কাটা হচ্ছে তার পাশে  ঝুলছে একটি আদালত হতে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড। এছাড়া খালের পাশের জমি মালিকরা লাল নিশানও টানিয়ে রেখেছেন।
স্থাণীয় কৃষকরা বলেন, তাদের জমির পাশের খালের  মাটি কাটার ফলে খালের পাশের হাসেম, হাকিম, রফি গংদের জমির মাটি ভেঙ্গে খালে পরছে।  জমি  মালিকরা বারবার মাটি কাটতে বারন করা সত্ত্বেও ড্রেজার মালিকরা কর্নপাত করছে না।
এ ব্যাপারে স্থাণীয় শিপন বলেন, অনেকদিন ধরে খালের মধ্যে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটছে বুলবুল মেম্বার, সোরহান ও স্বপন। এরা সারা বছরই খালের মাটি চুরি করে বেচে। এটাই তাদের পেশা। বুলবুল মেম্বার আদম ব্যবসা ও মানবপাচারের সাথেও জড়িত। রাতে মাটি কাটতাছে খবর পেয়ে আমরা আসলে বুলবুল মেম্বারের ড্রেজার শ্রমিকরা পালিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে স্থাণীয়  মো. শরীফ জানান, খালের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে মাটি কাটতাছে। সোরহান আর  বুলবুল মেম্বার মিলে মাটি কাটছে। আগে দিনে মাটি কাটলেও এখন রাতের আধাঁরে মাটি কাটছে তারা। এতে আমাদের জমি বাড়িঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে। অপর কৃষক আ: হাকিম বলেন, সরকারী খালে মাটি কাটার সাথে বুলবুল মেম্বার ও সোরহান জড়িত। মাটি কাটার ফলে আমাগো জমি ভেঙ্গে পরছে। আমরা বারবার মাটি কাটতে নিষেধ করছি তারা কোন কথাই শুনছেনা।
স্থাণীয় কৃষক রফি বলেন, আমার জমির পাশে ড্রেজার বসাইয়া সোরহান আর বুলবুল মেম্বার মাটি কাইটা নিয়ে যাইতেছে। আমি বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা আমাকে কোন পাত্তাই দিচ্ছেনা। পরে আমি আদালত হতে নিষেধাজ্ঞা আনছি তাও ওরা মানছে না।
এ ব্যাপারে খিদিরপাড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য অভিযুক্ত শেখ বুলবুল আহমেদ বলেন, আমি মাটি কাটার সাথে সংপৃক্ত নই। আমি দুইবার রানিং মেম্বার। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে একটি মহল। মাটি খাল থেকে নয়, খালের পারের মালিকানা জমি হতে কাটা হচ্ছে এলাকার গোলিয়া খোলা মাঠ ভরাটের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *