অজানা এক আতঙ্কের নাম মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি / প্রসঙ্গ অস্বাভাবিক বিল বৃদ্ধ

কাজী বিপ্লব হাসান : বর্তমানে মুন্সীগঞ্জের অজানা এক আতঙ্কের নাম হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। কি জন্য এ নাম হতে পারে এ প্রসঙ্গে গ্রাহকের ভাষ্য হলো, হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়। অভিযোগ কেন্দ্রে গেলেও তেমন আশ^াস পাওয়া যায় না। তাদের স্টাফের পরিচিত কেউ হলে তাদের কাজটি তৎক্ষনাৎ করে দেয়া হয়। বিল বৃদ্ধির প্রসঙ্গে চর কিশোরগঞ্জের আলম হোসেন জানান, তার নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল আসে ৫০০ হতে ৬০০ টাকা। কিন্তু হঠাৎ মে মাস থেকে তার বিল অস¦াভাবিক বেড়ে ২০০০ টাকা হয়ে যায়। পরবর্তী জুন মাসে ও বিল আসে ২০১৮ টাকা। এ ব্যাপারে তিনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করলে অফিসের একজন স্টাফ বলেন, সব মানুষ কি এক রকম খায়? কেউ বেশি কেউ কম খায়। অভিযোগের উত্তর কি এমন হতে পারে? আলম হোসেন জানান, তার আগের মিটার চেঞ্জ করে পল্লী বিদ্যৎ থেকে একটি নতুন মিটার লাগিয়ে দেয়। এপর হতেই ভূতুরে বিল আসতে থাকে। মধ্য কেওয়ার এর অপর গ্রাহক মাসুদা বেগম বলেন, আগে ৭০০ হতে ৮০০ টাকা বিল আসতো। গত ৩ মাস যাবত বিল বেড়ে ৩,০০০ হতে ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত আসছে। তারা অভিযোগ কেন্দ্রে গেলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে বলা হয়, মিটার কি এমনি এমনি ঘোরে? আপনারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যাবহার করেন বলে বেশি বিল আসছে। গ্রাহকের বক্তব্য হলো, শুধু একটি নতুন ফ্রিজ ব্যবহারে এতো বিল বাড়তে পারে? মধ্য কোর্টগাঁও এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক বিপ্লব হাসান জানান, তার একটি ঘর আছে সেখানে কেউ থাকেনা তবে মিটার বসানো আছে। সেখানে নিয়মিত ৫২ হতে ৫৫ টাকা বিদ্যুৎ বিল আসতো। হঠাৎ করে গত মাসে ১৪০৮ টাকা বিল আসে। এই ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডি জি এম মো: এনামুল হক বলেন আমি এ ব্যাপারটি দেখবো কারনটি কি। পরবর্তী সময়ে বিকেলে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের একজন মহিলা স্টাফ বিপ্লব হাসানকে ফোন করে জানান, তাদের মিটারের নাম্বার মিস্টেক হয়ে গেছে। এক নাম্বারের মিটারের বিল অন্য নাম্বারে চলে এসেছে। গ্রাহকের ভাষ্য হলো, মিটার সংযোজন করার সময় মিটার নাম্বার সেট করা হয়ে থাকে। সে নাম্বার পরিবর্তন হয়ে অন্য নাম্বারে যায় কি করে? উত্তর ইসলামপুরের সাইদ জানান তার প্রিপেইড মিটারে প্রতি মাসে ১০০০ টাকা ভরলে ১৫০ টাকা করে কেটে নেয়। এই বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডি জি এম মো: এনামুল হক বলেন, শুধু প্রথম মাসে ১৫০ টাকা মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ হিসেবে কাটে। কিন্তু সাইদের প্রতি মাসেই ১০০০ টাকা ভরলে মাঝে মাঝে পাওয়া যায় ৭৩৭ টাকা অথ্যৎ ২৬৩ টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। আবার কেউ কেউ উল্লেখ করেন যে ৫০০ টাকা ভরলে ২৪০ টাকা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। পল্লী বিদুৎ সমিতি আগে থেকেই হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধি করে আসছে বাণিজ্যিক এলাকায়। এই প্রসঙ্গে ২৫ মে ২০২৪ স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় মুন্সীগঞ্জের ৩৩টি কোল্ড স্টোরে মার্চ মাসে বিদ্যুৎ বিল ছিলো ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। এপ্রিলে সেই বিল এসেছে ৫ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা, বিল বৃদ্ধির পাশাপাশি ভৌতিক বিল করা হচ্ছে। এবার আবাসিক এলাকাতেও পল্লী বিদ্যুৎ এমন অবস্থা তৈরি করছে। গ্রাহকরা আরও বলেন যে, প্রায়ই বিদ্যুৎ বিলে কত টাকা উল্লেখ করা হয়েছে তা স্পষ্ট করে বুঝাও যায় না। গ্রাহকের বক্তব হলো, আমরা চাই পল্লী বিদ্যুৎ আমাদের সাথে বন্ধু সুলভ আচরন করে নির্দিষ্ট বিলই যেন আমাদের মাঝে পৌঁছে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *