জেলা প্রশাসক, সাংবাদিক ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ডিঙ্গাভাঙ্গায় বাল্যবিবাহ বন্ধ॥ অতঃপর মুচলেকা ভঙ্গ করে আবার বিয়ের আয়োজনে এক জন আটক !!
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া জাহান, সাংবাদিক ও পুলিশের তৎপরতায় বাল্য বিবাহ দিন দিন কমে আসছে। এর মাঝেও কেউ কেউ বাল্য বিবাহ দেওয়ার পায়তারা করে চলেছেন। এরকমই একটি ঘটনা ঘটে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ডিঙ্গাভাঙ্গা এলাকার মাদবর বাড়ীর ভাড়াটিয়া কামাল হোসেনের মেয়ের। মেয়েটি সবেমাত্র এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছে। নারায়নগঞ্জ এলাকায় বিবাহ দিচ্ছেন বলে জানান মেয়ের বাবা। রবিবার গোয়ালঘুন্নি আপন কমিউনিটি সেন্টারে বিবাহ দেওয়ার জন্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে এবং তা মুচলেকায় থানা থেকে ছাড় পেয়ে খানার আয়োজ পূনরায় চলতে দেখা যায় বলে জানা যায়। ভাড়াটিয়া বাড়ির ছাদে গায়ে হলুদ দিয়ে বিবাহ সম্পন্নের কাজ চলছিল। গায়ে হলুদে বিয়ার ও মদের আসরেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই বিয়েটিও জেলা প্রশাসক, সাংবাদিক ও পুলিশের হস্তক্ষেপে বন্ধ হওয়ার পথে। এ বিষয়ে মেয়ের বাবা ও চাচাকে থানায় আটক রাখা হয়েছিলো আজ রবিবার সকাল ১১টয় বিয়ে না দেওয়ার অঙ্গিকার করে , কিন্তু থানা থেকে বেড়িয়ে বিয়ের আয়োজন আবার দেখা যাওয়ায় প্রশাসনের প্রতি একধরনের বৃদ্ধাআঙ্গিলি প্রর্দশণ নয় কি ??? আর সদর থানার এস,আই আজ দুপুর ৩টায় মেয়ের চাচা মোঃ হানিফকে আটক করে সদর থানায় পূণরায় আটক করে রাখেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঐ বাড়িতে এমসিটিভির একটি টিম উপস্থিত হয়ে বাল্য বিবাহের বিষয় জানানো হয় এবং মেয়ের জন্ম সনদ বা এস.এস.সি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন ও এডমিট কার্ড চাওয়া হলে মেয়ের বাবা কামাল হোসেন প্রথমে সন্ত্রাসী দিয়ে সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে সদর থানার এস.আই মহসিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম বিয়ে বাড়িতে পৌছলে তাদের সাথেও মহিলা ও মেয়ের বাবা দুর্ব্যবহার করেন। এক পর্যায় সন্ত্রাসী দিয়ে সাংবাদিকদের আটকিয়ে রাখারও চেষ্টা করেন। ম‚লত মেয়ের বাবার বাড়ি মিরকাদিম পৌরসভার গোয়াল ঘুন্নি গ্রামে। এক মাস যাবৎ মাদবর বাড়িতে ভাড়া এসেছেন মেয়েকে বিবাহ দেওয়ার জন্য।
মেয়ের বাবা কামাল হোসেন , মেয়ের চাচা হানিফ এসে জানান, মেয়ের বয়স ১৬বছর। পুলিশের সামনে এও বলেন, যেহেতু পুলিশ সাংবাদিক বিবাহের বিষয়টি জেনে ফেলেছে তাই বিবাহ বন্ধ। কিন্তু বিবাহ বন্ধ না করে গোপনে মিরকাদিম গোয়ালঘুন্নী এলাকার জনপ্রিয় কমিনিটি সেন্টারে বিয়ের প্রস্তুতি ও প্রীতিভোজের সময় সংবাদ কর্মীরা প্রশাসনকে অবহিত করিলে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে মেয়ের চাচা মোঃ হানিফ কে আটক করেন , মেয়ের বাবা মোঃ কামাল হোসেন পালিয়ে যায়।।
এমন বিষয় মিরকাদিম পৌর কাউন্সিলর (সংরক্ষীত ১,২,৩) শামছুন নাহার শিল্পি জানান , আমার জিম্মায় থানা হতে মুচলেকা দিয়ে এনেছি তবে মেয়ের বাবা কামাল হোসেন শর্ত অনুসারে কোন কথা রাখেনাই বরং এই বাল্য বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়ায় আমি থানা পুলিশ কে খবর দিয়ে পুলিশ পাঠাই।পরে পুলিশ এসে প্রীতিভোজ ছত্র ভঙ্গ করে দেয় এবং মেয়ের চাচা হানিফকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ সকল বাল্য বিবাহ দেওয়ার জন্য যারা সহযোগিতা করে তাদেরকে আইনের আওতায় না আনলে বাল্য বিবাহ দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। মেয়ের বাবা ও চাচা এবং এই বিবাহের সাথে আরো যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানার সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, মুচলেকা দিয়ে প্রশাসনের সাথে প্রতারনা করা,এবং গোপনে বাল্য বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া একটা জঘন্ন অপরাধ । এই বিষয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
মুন্সিগঞ্জ ভয়েজ ডট কম