মুন্সীগঞ্জে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ‘পতাকা ৭১’ ভাষ্কর্য
স্টাফ রিপোর্টার: দেশের প্রথম ‘পতাকা ৭১’ ভাষ্কর্য ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে মফস্বল শহর মুন্সীগঞ্জ। ঢাকা বা অন্যত্র বসবাসকারী অনেক মুক্তিযোদ্ধা স্বপরিবার আসতে শুরু করেছে মুন্সীগঞ্জে। এই ভাষ্কর্যকে ঘিরে নতুন ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছে জীবন্ত কিংবদন্তী বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ। ভাষ্কর্যটি উদ্বোধন করবে মুন্সীগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
উদ্বোধনকালে যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নিবেন প্রত্যেকের নাম জেলা প্রশাসনের রেজিস্টারে অন্তর্ভূক্ত থাকবে। সেই লক্ষ্যে বিশেষ ৬টি রেজিস্টার তৈরী করা হয়েছে। ছয় উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ ছয়টি রেজিস্টারে তাদের নাম স্বাক্ষর করবেন। যা বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসেও নতুন দিগন্ত রচনা করতে যাচ্ছে।
এত সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার এমন উদ্বোধনের ঘটনা এটিই সম্ভবত দেশে প্রথম। তাই মুন্সীগঞ্জ শহরের লিচুতলায় ভাস্কর্যটিকে ঘিরে মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলার সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ভাষ্কর্যটি ঘিরেই হচ্ছে মূল উদ্বোধনী মঞ্চ। নান্দনিক আয়োজনটিতেও রয়েছে বৈচিত্রতা। এই ভাষ্কর্যটি ছয় দফার ছয়টি হাতে ধরে রাখা হয়েছে। মানচিত্র খচিত ১৯৭১ সালের ২৩ শে মার্চ প্রথম বঙ্গবন্ধু তাঁর ধানমন্ডির বাস ভবনে উত্তোলন করেন।
যার প্রেক্ষিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র উড়তে থাকে এই পতাকা। শুধু ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া প্রায় সবখানেই এই পতাকা উড়ানো হয়েছিল বলে দাবী বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদের।
এর আগে ১৯৭১ সালের ২মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পতাকাটি উত্তোলন করা হয়েছিল। আর সেই পতাকা দিয়েই করা হয়েছে এই ভাষ্কর্য। তাই মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই পতাকা দেখতে আসছে কৌতুহলী মানুষ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষ্কর্যটি জাতীয় পতাকা দিয়ে ঢাকা থাকবে। দু’পাশ থেকে দুই ভাগে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এক যোগে ঢাকা থাকবে। দু’পাশ থেকে দুই ভাগে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এক যোগে রশি টেনে এর উন্মেচন করবেন। এরপর ভাষ্কর্য মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। এতে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশনিবেন।
আয়োজনটি সফল করতে ভাষ্কর্যটির মূল উদ্যোক্তা জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা মঙ্গলবার সকালে শহরের লিচুতলার ভাষ্কর্যস্থল পরিদর্শন করে মঞ্চ তৈরীসহ সকল প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন।
মুন্সীগঞ্জ পৌর মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব পৌরসভা থেকে আয়োজনটির সাজসজ্জার দায়িত্ব নিয়েছেন। আর তার তত্ত্বাবধানে এই মঞ্চ তৈরীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শিল্পী বিন্দু সরকারকে।
পতাকা ভাস্কর্যের গবেষক ঢাকা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আলমগীর টুলুর পরিকল্পনা অনুযায়ী শিল্পী বিন্দু সরকার এই মঞ্চ তৈরীর কাজ বুঝে নেন।
সরেজমিন পরিদর্শনে জেলা প্রশাসকের সাথে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনিস-উজ্জামান আনিস ও বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার বিকাল ৩ টায় ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মাাঝে ছড়িয়ে দিতেই ‘পতাকা ৭১’ নামের এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করার পটভূমির কথা জানান জেলা প্রশাসক।
এ দিকে উদ্বোধনের আগেই ভাস্কর্যটি এক নজর দেখার জন্য কৌতুহলী মানুষেরা ভীড় জমাচ্ছে মুন্সীগঞ্জ শহরের লিচু তলা এলাকায়।
মুন্সিগঞ্জ ভয়েজ ডট কম