মুন্সীগঞ্জ শহরে মোটর সাইকেল সিন্ডিকেট বেপরোয়া, চোর ধরা পড়লেও নেই শাস্তির ব্যবস্থা
স্টাফ রিপোর্টার: মুন্সীগঞ্জ শহরে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা। তবে চুরির ঘটনা উদ্ধারে নেই কারো কোন তৎপরতা। এমন শতশত মোটর সাইকেল চুরি হওয়ার পরও চোর ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে কিংবা চোরের সাথে চোরাই গাড়ী থাকার পরও চোরের পক্ষে তদবিরের ফলে চোর ছাড়া পেয়ে যায়।
গত মাসের মার্চের ২১ তারিখ সন্ধা সাড়ে ৭টায় শহরের গণকপাড়া জৈনিক গোলাম সারোয়ার ছোটনের আরটিআর (এপাচি) মোটর সাইকেল ( যার নং ঢাকা মেট্রো ল ১৯-০৪৪৯) চুরি হয় এবং ২৭ই মার্চ উক্ত মোটর সাইকেল চোর সোহেলকে চোরা গাড়ীসহ জনতা গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পরে সোহেল গণধোলাই খেয়ে তার পিতা মোঃ বাবুল সহ একাধিক ব্যক্তির নিকট ¯^ীকার করে গাড়ী চুরির কথা। সেই তথ্য মোতাবেক গত সোমবার সন্ধার পর চুরি হওয়া গাড়ীর সন্ধান মিলে মোঃ মনির হোসেনের পুত্র মোঃ রিফাত(২৪) এর কাছে। রিফাতের গ্রামের বাড়ী সদর থানার মোল্লাকান্দির মহেশপুর গ্রামে। বর্তমান মহেশপুরের অবস্থা বেগতিক বলেই সদরের রামপাল ধলাগাও নানা বাড়ীতে থাকেন। ইতোমধ্যে শহরে মোটর সাইকেল চুরির হিড়িক পড়ায় জনমনে আতঙ্ক এবং চুরি গাড়ী উদ্ধার হওয়ায় সিন্ডিকেটদের মধ্যে এক ধরণের আতঙ্ক বিরাজ করছে। চোর ধরা পড়লেও তার কোন কিছুই সমাধান হচ্ছে না। আবার এই ধরনের চোররা সরকার দলীয় নেতাদের নাম জড়িয়ে নিজেরা বাঁচার চেষ্টা করছে বলেও জানা যায়।
চোরাই মোটর সাইকেল ক্রেতা মোঃ রিফাত জানায়, সে গত কয়েক দিন পূর্বে ৫০ হাজার টাকায় সদর থানার বাইন্না বাড়ীর চোর সিন্ডিকেট হাসানের সহযোগিতায় একটি আরটিআর মটর সাইকেলটি ক্রয় করে বেতকা এলাকার রোমানের কাছ থেকে। রিফাত আরো জানায়, রোমান এবং হাসান জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহন্মেদ পাভেল ভাই তাদের মুল হোতা। রিফাত কাছে থাকা মোটর সাইকেল চুরি হওয়া গাড়ী বিষয়টি সে আগে বুঝতে প পারেনি বলে মুল মালিক ছোটনের কাছে দিয়ে যায় এবং রিফাতের মামা রিফাতের জন্য ক্ষামা প্রার্থনা করেন বলে জানান রিফাত।
পৌর বাসিন্দা গোলাম সারোয়ার ছোটন সেল ফোনে জানান, গত ২ শে মার্চ আমার বাড়ী হতে গাড়ী চুরি হয় ২৭ তাং আমাদের এলাকা বাসীর সহায়তায় চোরা সোহেল কে আরো একটি চোরা মটর সাইকেলসহ আটকের পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। শহরে দিন দিন গাড়ী চুরি বাড়ছেই । এর প্রতিকারে শুধু পুলিশের একার কাজ না কিছু সচেতন জনগনকে পুলিশের কাজে সাহায্য করাটা জরুরী। ছোটন সেল ফোনে আরো জানান, আমার বাড়ী থেকে গাড়ীটি নিয়ে যায়। এর কোন মানে পাচ্ছি না। কেমন চোর? আমার গাড়ী চুরি করে। তবে এর পেছনে বড় সিন্ডিকেট কাজ করছে। পুলিশ প্রশাসনই পারবে সঠিক তদন্ত করে সিন্ডিকেট লিডারকে আটক করতে। আমার এই গাড়ী চোর সোহেল ও রিফাত কে দিয়ে বাকী যে কয়টি নামের তালিকা আছে তাদের আটক করতে সহজ হবে। এই গাড়ীটির অনেকটা যন্ত্রাংশ অন্য গাড়ীর সাথে বদল করা হয়েছে। কোন ম্যাকানি দিয়ে বদল করে সেই সুত্রেই নতুন নতুন চোর আটকে সহজ হবে বলেও জানান তিনি।
এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহম্মেদ পাভেল জানায়, এই ধরনের মটর সাইকেল চুরি শহরের সিন্ডিকেট করে খাকে। ইতিমধ্যে পঞ্চসার এলাকার দেওয়ান রহমতউল্লাহর কাছ হতে ঢাকা থেকে চুরি হওয়া গাড়ী উদ্ধার করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমি রাজনীতি করি তাই আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অপবাদ ছড়াতে পারে এটাই স্বাভাবিক। তবে কে কি বলে তা বড় বিষয় না, পুলিশ বিষয়টি দেখবেন সঠিক নিয়মে তা আমার বিশ্বাস।
জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম পিপিএম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। তবে সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে আর মোটর সাইকেল মালিকদের কাগজ পত্রের অভাব থাকায় অনেকটা ধীর গতিতে কাজ করতে হয়। যাহাদের গাড়ী চুরি হয় বেশির ভাগই কাগজের গড়মিল থাকছে বলে তদন্ত ধীরগতি চলছে। আজকে যে গাড়ীটি এলাকাবাসী চালক সহ আটক দেয়া হয় তার বিষয় আমাদের পুলিশ কাজ করছেন এবং যাহাদের নাম আসবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।