টঙ্গীবাড়ী আওয়ামীলীগের পাল্টা কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ

টঙ্গীবাড়ী আওয়ামীলীগের পাল্টা কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ
মোঃ রুবেল:টঙ্গীবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের পাল্টা কমিটি অনুমোদনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ সমাবেশ, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর সহ প্রধান সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে।
২২ জুন শনিবার সকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমম্পেক্স এর সামনে থেকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস পর্যন্ত এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।  শতশত নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয।
সমাবেশে দুই কমিটির একই সভাপতি হাফিজ আল আসাদ বারেক জানান, আমি গনতান্ত্রিক ভাবে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হই। আমার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহসান কবির হালদার ২৩৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আমরা নির্বাচিত হওয়ার পর পূর্নাঙ্গ কমিটি করে জেলা কমিটির নিকট দাখিল করি। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানী শান্ত সাধারন সম্পাদক পদে কাউন্সিলে ১৪৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। আরেক প্রার্থী স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি বেলায়েত হোসেন লিটন মাঝি ৬৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন।
৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঐ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঐ দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে কাউন্সিলরদের ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এর আগে ঐ দিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কাউন্সিলরদের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ৪৯৬ জন মনোনীত কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কাউন্সিলের পরই পূর্নাঙ্গ কমিটি করে জেলা কমিটিতে জমা দেওয়ার ৩ বছর অতিবাহিত হলেও কমিটির অনুমোদন দিচ্ছিল না। পরবর্তীতে কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক কবির হালদার ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে একটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন। ১৯ জুন ঐ মামলায় ১নং আসামী কবির হালদারের বড় ভাতিজা টঙ্গীবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান হালদার ও ২ নং আসামী কামারখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খুকু হালদার জামিনে মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বের হন। অপরদিকে কবির হালদারের জামিন আবেদন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। কবির হালদারের ভাতিজার সাথে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে। সেখানেও সে ফেল করেন। নির্বাচনের পূর্বে প্রকাশ্যে একটি হত্যা মামলায় কবির হালদার গং উপস্থিত না থাকলেও কৌশলে কবির হালদার পরিবারের ৯ জনকে আসামি করেন। হাফিজ আল আসাদ বারেক আরো জানান, আমি এই কমিটি মানি না, এই কমিটির কারো সাথে কাজ করবো না। আমার জমা দেওয়া কমিটি অনুমোদন দেয়া হোক। লিটন মাঝি আমার প্রস্তাবিত কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। কাউন্সিলে তিনি তৃতীয় হয়েছিলেন। সে কিভাবে সাধারন সম্পাদক হন? অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি করে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলো।
২০ জুন জেলা আওয়ামী লীগের মিটিংয়ের মাধ্যমে কমিটি গঠনের বিষয় কোন আলোচনা হয়নি। সভাপতি আরো জানান, আমাকে না জানিয়ে বাসার কাজের লোক, বিএনপির লোক সহ নিজেদের অনুসারি দিয়ে বিতর্কিত কমিটি করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে কমিটি প্রকাশ হলে তৃনমূল আওয়ামী লীগের কর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রীয়া দেখা দেয়। প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য  কিভাবে সম্ভব এত বড় অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি গঠন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান জানান, টঙ্গীবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজ আল আসাদ বারেকের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাহিদ খান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এমিলি পারভিন, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান শিল্প, কামারখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান খুকু হালদার প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *