মুন্সীগঞ্জে মাদ্রাসার ওয়াকফাকৃত জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রিন্সিপাল ও সভাপতির বিরুদ্ধে

কাজী আনসার:মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার শিলই ইউনিয়নের আকালমেঘ আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসার ওয়াকফাকৃত জমি মাদ্রাসা বোর্ডের অনুমতি ছাড়াই বিক্রি পূর্বক অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রার প্রিন্সিপাল ও সভাপতির বিরুদ্ধে। মাদ্রাসাটি ১৯৯২ সালে স্থাপিত হওয়ার পর থেকে অদ্য পর্যন্ত এলাকাবাসীর ইসলামাকি শিক্ষা/শিক্ষা বিকাশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান বটে। অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার লোভি প্রিন্সিপাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও সভাপতি মোঃ ছায়েদ বেপারী মাদ্রাসার দান/ওয়াকফাকৃত জমি, আকালমেঘ মৌজার, আর.এস. খতিয়ান নং-১৮০, দাগ নং-২২৩এর ৮(আট) কড়া জমি ১(এক লক্ষ) ৫০(পঞ্চাশ) হাজার টাকা কড়া প্রতি মূল্য নির্ধারণ পূর্বক একই ইউনিয়নের পূর্বরাখী গ্রামের ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মর বেপারীর ছেলে মোঃ ইমরান হোসেনর নিকট আনরেজিষ্ট্রি স্থাবর সম্পত্তি/জমি বায়না নামা দলিল মূলে বিক্রয় করে। ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময়কালে বিগত আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রিন্সিপাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন ও সভাপতি মোঃ ছায়েদ বেপারী গত ০৪অক্টোবর-২৩ সালে মাদ্রাসা বোর্ড কতৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এ জমি বিক্রি করে।

সরজমিনে অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা বেরিয়ে এলো, গত ৯ফেব্রুয়ারী-২৪ ইংরেজি তারিখে উক্ত প্রতিষ্ঠান ও আশ-পাশে লোকজনের কাছে সন্ধ্যান করে জানা যায়, প্রিন্সিপাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের দূর্নীতির অভাব নেই বল্লেই চলে। সে তার নিজের ইচ্ছে মতো মাদ্রাসায় নিয়ম তৈরি করেছে বলে জানা যায়। সরকারী/বে-সরকারী অনেক দান/অনুদানই সে তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যয় করে থাকে, এক কথায় আত্মসাৎ করে। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তার স্ত্রী দ্বারা বে-আইনি ভাবে পরিচলনার নামে অত্যাচর করে বলেও সত্যতা মিলে।

মাদ্রাসার ওয়াকফাকৃত জমি ক্রয়ের বিষয়ে ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ বেপারী বলেন, আমাদের কি দোষ? তিনারা বিক্রি করেছে বলেইতো আমার ছেলে ক্রয় করেছে। দিল মোহাম্মদ বেপারীর ছেলে জমি ক্রেতা মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, মাদ্রার প্রিন্সিপাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জমি বিক্রি করেছে, আমি ক্রয় করেছি। সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান হোসেন বলেন, যেহেতু ১২(বার) লক্ষ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে আমার নিকট হইতে দুই বারে ৫(পাঁচ) লক্ষ টাকা অগ্রীম নিয়েছে, সেহেতু জাহাঙ্গীর হোসেন আমাকে আপাতত বায়না নামা দলিল করে দিয়েছে এবং বলেছে পরবর্তীতে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে অনুমতি এনে সাব-কবলা রেজিষ্ট্রারী করে দিবে।

মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের নিকট মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি বিক্রয়ে বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে।আরোও বলে শিক্ষা অফিসার ও ইউএনওকে ম্যানেজ এবং অবগত করেই জমি বিক্রি করেছি। মাদ্রাসার প্রয়োজন হয়েছে তাই জমি বিক্রি করেছি এতে আপনাদের কৈফিয়ৎ দেয়ার কিছু নেই। মাদ্রাসা বোর্ডের ছাড়পত্র ছাড়া জমি বিক্রয় করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে বলে, অনুমিত আনা/না-আনা আমার ব্যাপার। মাদ্রাসার সভাপতি মোঃ ছায়েদ বেপারী বলেন, ওই সময় প্রিন্সিপাল আমাকে বলেছে কোন সমস্য নেই আমি উপর মহলে বুঝে নিব, আপনি স্বাক্ষর করেন।

এবিষয় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি এসম্পর্কে অবগত নই। দাখিল মাদ্রাসার ওয়াকফাকৃত জমি ওয়াকফা বোর্ডের ছাড়াপত্র/অনুমতি ব্যতিত বিক্রয় করতে পারেনা। বিক্রয় করলে এটা অপরাধ।

এবিষয় জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি এবিষয়ে কিছুই জানিনা, আপনাদের কাছ থেকে এখন শুনাম। প্রিন্সিপালের মোবাইল নাম্বারটা দেন আমি তার সঙ্গে কথা বলছি। তাছাড়া দাখিল মাদ্রাসার ওয়াকফাকৃত জমি মাদ্রাসা বোর্ডের সম্পত্তি বটে বোর্ডের অনুমতি/ছাড়পত্র ছাড়া তিনি কিছুতেই এ জমি বিক্রি করতে পারে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *