জবানের সুব্যবহারে নজর দিতে হবে

আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতিত কোনো মাবুদ নেই

ইসলামে বাক সংযম বা জবানের হেফাজতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ চান বান্দাকে তিনি যে জবান দিয়েছেন তা যেন মিথ্যাচার ও অকথা- কুকথায় ব্যবহৃত না হয় ।

জবানের মাধ্যমে যেন অপরকে কষ্ট না দেওয়া হয়। বিশেষ করে আল্লাহর এই নেয়ামত যাতে মিথ্যাচারে ব্যবহৃত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। যারা ভালো কথা বলে তাদের পুরস্কৃত করা এবং যারা কটু কথা বলে তাদের তিরস্কৃত করার কথা বলা হয়েছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে।

হজরত বেলাল ইবনে হারেস (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো লোক ভালো কথা বলে, কিন্তু সে তার মর্যাদা সম্পর্কে বেখবর। তার জন্য আল্লাহতায়ালা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভের দিন পর্যন্ত (অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত) নিজের সন্তুষ্টি লিখে রাখবেন। আবার কোনো লোক খারাপ কথা বলে, কিন্তু সে জানে না, তা তাকে কোথায় নিয়ে যাবে? তার জন্য আল্লাহতায়ালা তার সঙ্গে সাক্ষাতের দিন (অর্থাৎ মৃত্যু) পর্যন্ত নিজের অসন্তুষ্টি লিখে রাখবেন। (শরহে সুন্নাহ)।

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা বর্জন করে তার জন্য জান্নাতের এক প্রান্তে প্রাসাদ নির্মাণ করা হবে । আর যে ব্যক্তি হক ও ন্যায়ের ওপর অটল থেকে ঝগড়া-বিবাদ পরিত্যাগ করে তার জন্য জান্নাতের কেন্দ্রস্থলে প্রাসাদ নির্মাণ রা হবে। আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে উত্তমরূপে গড়ে তোলে, তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অট্টালিকা তৈরি করা হবে। (তিরমিজি)। অপর হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা জান কি কোন বস্তু মানুষকে সর্বাপেক্ষা বেশি জান্নাতে প্রবেশ করাবে? তা হলো আল্লাহর ভয় এবং সচ্চরিত্র। তোমরা জান কি মানুষকে কোন বস্তু সর্বাপেক্ষা বেশি দোজখে প্রবেশ করাবে? তা হলো দুটি ছিদ্র পথ। একটি মুখ এবং অন্যটি লজ্জাস্থান। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)। মিথ্যা কথা কখনো রসিকতার হলেও বলা যাবে না। রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, সে ব্যক্তির জন্য ধ্বংস, যে কথা বলে এবং মানুষকে হাসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা কথা বলে। তার জন্য ধ্বংস, তার জন্য ধ্বংস। (আহমদ, তিরমিজি, আবু দাউদ ও দারেমী)। আরেক হাদিসে এসেছে, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তি এরূপ কথা বলে, যা শুধু মানুষকে হাসানোর উদ্দেশ্যেই। এ কথার জন্য সে দোজখের মধ্যে এত বেশি দূরে নিক্ষিপ্ত হবে, যতটা দূরত্ব রয়েছে আসমান এবং জমিনের মধ্যে। আসলেই মানুষের পদস্খলন অপেক্ষা মুখের স্খলন অধিক মারাত্মক। (বায়হাকী)। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে জবানের হেফাজত করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *