যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের এমন কিছু নিয়মনীতি আছে, যাতে আপনাদের বিরুদ্ধে হাত দেওয়া যায় না। আমরা কিন্তু ওসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা করব না। নিয়মনীতি মেনে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়নি। যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে সরকার পরিচালনা ভবিষ্যতে নিয়মনীতি মেনে হবে না। প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন নিয়োগ দিয়ে নতুন নতুন লোক বসানো হবে।’
আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম বিভাগ ও জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ রোধে ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সরকারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে প্রশাসনে স্থবিরতা বিরাজ করছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এটার জন্য আমাদের সর্বশেষ ক্যাবিনেট মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। হয়তো আমাদের কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। আসলে এখানে একটা বিপ্লব হয়েছে। আপনারা অনেকেই হয়তো বুঝে উঠতে পারছেন না আমার মনে হয়। বিপ্লবের পর কোনো কিছু সিস্টেমের ভিত্তিতে চলে না। এখনো আমরা সিস্টেমটাকে বজায় রেখেছি। আমরা প্রত্যাশা করি, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন এটি বজায় রাখার জন্য। কিন্তু সিস্টেম যদি ভাঙার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে সিস্টেম ভাঙব এবং প্রয়োজনে নিয়োগ দিয়ে নতুন নতুন লোক বসাব।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও সহনীয় মূল্যে চট্টগ্রামে ট্রাকে পণ্য বিক্রির বিষয়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আপনাদের এত এক্সপার্টিস (অভিজ্ঞ কর্মকর্তা), পড়াশোনা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা থাকার পরও যদি করতে না পারেন, তাহলে নতুনদের নিয়ে আসি। আপনাদের দিয়ে আমরা কী করব।’
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘টাস্কফোর্স বা ভোক্তা অধিকার আপনারা কয়টা অভিযান পরিচালনা চালিয়েছেন, কী পরিমাণ কাজ করেছেন, সে বিষয়ে আমি কিছুই পাইনি। আমাকে বাণিজ্যসচিব তিন দিনের টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। আমি এক দিন সেখানে চট্টগ্রামের নাম পেয়েছি, বাকি দুই দিন চট্টগ্রামের নামই নেই। ৪০ থেকে ৪৫টা জেলার মধ্যে টাস্কফোর্সের অভিযান করেছে কিন্তু চট্টগ্রামে তিন দিনের মধ্যে দুই দিনই আসলে কোনো অভিযানই হয়নি। আমার মনে হয়, এই জায়গায় আপনাদের সদিচ্ছার ঘাটতি আছে কিংবা সরকারের প্রতি অসহযোগিতার একটা ব্যাপার আছে।’
সরকারের প্রতিটি অঙ্গকে আগামী সময়ে ফাংশনাল (কার্যকর) হতে হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এখানে দেখলাম যে ৪৮টি জায়গা থেকে প্রতিনিধি আমন্ত্রণ করা হলেও ১০ থেকে ১২টি জায়গা থেকে নেই। লাইভস্টক প্রতিনিধি নেই। আপনাদের যেখানে প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন, সেখানে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। প্রতিনিধিত্ব না করলে আমরা অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনব। মিটিংয়ে ডাকা হয়েছে, কিন্তু আসেন নাই, এ জন্য জবাবদিহি চাওয়া হবে। জবাব পাওয়া না গেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথমআলো