ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরো ১৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩২ জন যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চল অবরুদ্ধ উত্তরে নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬০ ছাড়িয়ে গেছে। বুধবার (৩০ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার গাজা ভূখণ্ডজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে মেডিকেল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে। যার মধ্যে কেবল উত্তর গাজায় নিহত হয়েছেন ১৩২ জন।
এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হাজার ৬১ জনে পৌঁছেছে বলে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এছাড়া এক বছরেরও বেশি সময় চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।
এদিকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় উত্তর গাজার বেইট লাহিয়ায় একটি পাঁচ তলা আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে শিশুসহ বহু মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন। হামলা হওয়া ওই আবাসিক ভবনটিতে বাস্তুচ্যুত অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল।
অন্যদিকে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, মঙ্গলবার সারাদেশে ইসরায়েলের বর্বর হামলায় কমপক্ষে ৭৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সারাফান্দে নিহত হয়েছেন ১০ জন। যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।
ইসরায়েলের মিডিয়া রিপোর্ট করেছে, লেবাননের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের স্থল আক্রমণের মধ্যে চলতি মাসের শুরু থেকে দক্ষিণ লেবাননে লড়াইয়ে কমপক্ষে ৩৩ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
মূলত গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানী বৈরুতের পাশাপাশি লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অপারেটিভস, অবকাঠামো এবং অস্ত্রাগারকে লক্ষ্য করে এই হামলা চলছে।
দক্ষিণ লেবাননে মারাত্মক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির সিডন শহরের কাছে সারাফান্দ এবং হারেত সাইদায় সর্বশেষ হামলায় ১৫ জনের মধ্যে অনেক মহিলা ও শিশু নিহত হয়েছে। দেশটিতে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২ হাজার ৭৮৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ১২ হাজার ৭৭২ জন আহত হয়েছেন। শুধুমাত্র মঙ্গলবার সারাদেশে হামলায় ৭৭ জন নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।