শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশগুলোতে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় এবং খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারি উদ্যোগের প্রভাবে শিগগির মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায়।
তিনি আরও বলেন, অর্থপাচার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ বলবৎ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের গত ২৬ নভেম্বর যা সংশোধিত হয়। এই আইনের বিধান অনুসারে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচারকে মানিলন্ডারিং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মানিলন্ডারিং অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৪ (চার) বছর এবং সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এর অতিরিক্ত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা ও সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা (এর মধ্যে যা অধিক) অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ করতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পারষ্পরিক আইনগত সহযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা আইন, ২০১২ জারি করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ ছাড়া, এটর্নি জেনারেলের নেতৃত্বে বিদেশে পাচার করা সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত আনার বিষয়ে গঠিত টাস্কফোর্স পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য, সাক্ষ্য- প্রমাণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে প্রাথমিকভাবে ১০ দেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তি সইয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাচার করা অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পর ওই কৌশলপত্রের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পাচার করা অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে বিএফআইইউ কর্তৃক একটি গাইডলাইন্স প্রণয়ন করা হয়েছে, যা জাতীয় সমন্বয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।